সরবরাহ বাড়লে, নতুন আলু বাজারে আসলেই দামে স্বস্তি মিলবে বলে জানিয়েছেন রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার, বেপারীরা। মানভেদে আলু ৩৮-৩৯-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আড়তে। খবর: বাংলানিউজ
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মুন্সীগঞ্জের আলু বেপারী আমিন শেখ বসেছিলেন রিয়াজউদ্দিন বাজারের মেসার্স মামুন ট্রেডার্স নামের আড়তে।
তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জ, রাজশাহী, জয়পুরহাট, বগুড়া, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুরে আলু হয় বেশি। হিমাগারে ম্যাজিস্ট্রেট গেছেন গতকাল৷ হিমাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে আলু কম রাখা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে আলুর জমিতে ভুট্টা, সরিষা, গম চায হয়েছে৷ গরুর ঘাসের চাষ করেছে। দুই বছর লস দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন আলু লাগানো হবে। ৫৫-৬০ দিনে ফলন আসবে। তখন দাম কমবে।
তিনি জানান, চর মুক্তারপুর থেকে চট্টগ্রামে এক ট্রাকে ১৩-১৪ টন আলু আসে। ভাড়া ১৪ হাজার ২০০ টাকা। ৪৫০-৮০০ টাকায় ৪০ কেজি আলু কিনে হিমাগারে রেখেছি। একটি চটের বস্তা ৫০ টাকা। জমি থেকে আলু উঠানোর মজুরি, পরিবহন খরচ বস্তাপ্রতি ৬০ টাকা। কেজিতে ৫ টাকা হিমাগারে চার্জ দিতে হয়। হিমাগার থেকে বের করে পচা, ছোট আলু বাছাই, ফ্যানের নিচে রাখার গুদাম ভাড়া কেজিতে ২ টাকা। বস্তায় ৩ কেজি ঘাটতি থাকে।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীর বালীগাঁওয়ের চাষি মো. রাসেল জানান, আমরা ৬০ কানি আলু চাষ করেছি। এবার আলু তোলার সময় বৃষ্টিতে লাখ লাখ টাকার আলু নষ্ট হয়েছে। যে আলু পেয়েছি তা চার মাসে বিক্রি করতে হবে। আগের বছর বৃষ্টির কারণে এক জমিতে দুইবার লাগাতে হয়েছে। প্রতি কেজিতে খরচ ৩০ টাকা। বিক্রি করছি কেজি ৯ টাকা। ট্রাক্টরের ডিজেল তেল, সার, ওষুধ, লেবার, জমির ভাড়া, বিদ্যুতের বিল, হিমাগারের চার্জ, গাড়ি ভাড়া, বীজের দাম-সব বাড়তি। মুন্সীগঞ্জ নিচু এলাকা হওয়ায় দুই মাস পর আলু লাগাবো।
মেসার্স মামুন ট্রেডার্সের মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, আজ মানভেদে আলু ৩৮-৩৯-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে আড়তে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। আড়ত থেকে কেউ আলু কিনলে ৫০-৫৫ কেজির বস্তায় ১০ টাকা আড়তদারি ও ২৫ টাকা লেবার চার্জ দিতে হবে।
তিনি জানান, আলুর ব্যবহার বাড়ছে। তরকারি, বিরিয়ানি, চিপস, সিঙাড়া ছাড়াও আলুর বহুমুখী ব্যবহার বাড়ছে।
মুছা বাণিজ্যালয়ের মালিক শফিউল আলম জানান, পরশু ৩টি, গতকাল ১৬টি, আজ ১১ গাড়ি আলু এসেছে রিয়াজউদ্দিন বাজারে। চাহিদা ২২-৩০ গাড়ি আলুর। এবার আলুর উৎপাদন ও চাহিদায় ঘাটতি আছে। আলুর আড়ত মুন্সীগঞ্জে। সেখানে সিন্ডিকেট আছে কিনা সরকার খতিয়ে দেখতে পারে। আমরা কেজিতে ৮০ পয়সা কমিশন পাই। কয়েক বছর আগে হারুণ শেখ নামের এক আলু ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছে। এখনও বেপারি, আড়তদার সবাই বিপাকে আছে। কৃষিতে মনোযোগ দিতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। আজ আলু ৩৯-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আড়তে।